ফল কিনলে মাছি আসে, মাছ কিনলে মেছো ভুত !!
◼️ পেট কাটা 'ষ' : এই বিল্ডিং এ মেয়ে নিষেধ
▶️ নির্মাতা : নুহাশ হুমায়ূন
#spoiler_free
নির্মাতা যখন নুহাশ হুমায়ূন তখন দর্শকরা ভাল কন্টেন্টের ঘ্রাণ খুঁজবে নিশ্চয়ই। নবীন এই নির্মাতার প্রথম ওয়েব সিরিজের সেই ঘ্রাণ কতটুকু বিমোহিত করতে পেরেছে আমাদের? 'পেট কাটা ষ' নাম দেখে শুরু থেকেই অদ্ভুত একটা ভাল লাগা ছিল। তার উপর এটা এ্যান্থলজি সিরিজ। চরকিতে এর আগে 'ঊনলৌকিক' ও 'জাগো বাহে' নামে দুর্দান্ত দুটি এন্থলজি সিরিজ আমরা পেয়েছিলাম। সর্বমহলে দারুণ সাড়া পায় সিরিজ দুটি। তারই ধারাবাহিকতায় নুহাশ হুমায়ূনের 'পেট কাটা ষ' সিরিজের প্রথম পর্ব 'এই বিল্ডিং এ মেয়ে নিষেধ' রিলিজ পেল সাম্প্রতিক। কেমন লেগেছে যদি বলতে হয়- উত্তর হবে ভালো লেগেছে। তবে আরও ভালো হবার সুযোগ ছিল।
❎ যা কিছু ভালো লাগেনি :
প্রথমত পর্বের নামটা যুতসই মনে হয়নি। শুনতে বা পড়তে কেমন যেনো লাগলো। ২৭ মিনিটের পর্বটি দেখে মনে হলো 'এই বিল্ডিং এ মেয়ে নিষেধ' নাম নির্বাচন ভুল ছিল। খুব সাদামাটা বলা যায়। আরও ক্লিয়ার করে বললে ভয় বা ভৌতিক ঘরানার ঘ্রাণ ছিল না নামটির মাঝে। অন্য বিকল্প নাম সম্ভবত দেয়া যেতো।
ভাল না লাগার খুব বেশি কিছু নেই। ভুত বা পেত্নী চরিত্রে শীলা'র মেকআপে গোঁজামিল লেগেছে। হাত, হাতের নখ, পা বা সাদা শাড়ি সব ঠিকঠাক। তবে চেহারার মাঝে ভয় ব্যাপারটা কম ছিল। চেহারা আরও বিকৃত হলে মন্দ হতো না। আমার মনে হয় আরও জমতো। তাছাড়া ক্যামেরায় পুরো চেহারা ক্লিয়ার করে দেখানোর প্রয়োজনই বা কি দরকার। এছাড়া গ্রামে বা শহর নিয়ে যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখলাম দর্শকদের মাজে সেটা আহামরি কোনো বিষয় নয়। আজকাল শহরেও ভয়ানক বা ভয়ের স্থান রয়েছে বহু।
✅ যা কিছু ভালো লেগেছে :
হরর ঘরানার কাজ হিসেবে বিজিএম পারফেক্ট। দৃশ্য অনুযায়ী একদম শতভাগ ছিল বিজিএম। কানে ভয় ধরানোর শব্দের আওয়াজ ছিল বলতে হবে বিজিএমে। এমন টাইপ কাজে বিজিএম খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কালার গ্রেডিংও বেশ ভালো। আলো আঁধারির মাঝে বেশ সুন্দর। শীলা আহমেদের নখ, পা এবং মাছ খাওয়ার স্টাইল যথাযথ মনে হয়েছে। মুখ থেকে কালো অদ্ভুত কিছু বের করে মাছের সাথে মাখার সময় খারাপ লেগেছে। এটাই ভালো দিক।
অভিনয় নিয়ে বললে সোহেল মন্ডল দুর্দান্ত। একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি দারুণ অভিনয় করেছেন। মাছ নিয়ে আসা, মাছা কাটা বা ভাজা, ভয়ে ভয়ে পেছনে সরে যাওয়া একদম সলিড ছিল। ভয়েস ওভারও ভালো। এই পর্বের সেরা অর্জন তিনিই। চরিত্রের সাথে মিশে গিয়েছেন। এছাড়া শীলাও দুর্দান্ত। নতুন হিসেবে খুব ভালো করেছেন। তার ফিউচার যথেষ্ট ভালো। পেত্নী বা ভুতের চরিত্রে নিজেকে গভীরভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন। বেশ দারুণ শীলা।
সবমিলিয়ে, খারাপ অভিজ্ঞতা বলা যাবে না। নুহাশ হুমায়ূন ধন্যবাদ পাবেন। উপভোগ করেছি। এই প্রচেষ্টা চলতে থাকুক তার। শেষদিকে সোহেল মন্ডল ও তার বন্ধুদের দৃশ্যটা বেশ ভয়ের ছিল। একদম চমকে উঠার মতো।
তবে আর দেরী কেন, দেখে ফেলুন চরকি অরিজিনাল এন্থলজি সিরিজ "ষ" এর প্রথম পর্ব 'এই বিল্ডিং এ মেয়ে নিষেধ' ।
যাই করেন আর তাই করেন রাতে ভুলেও মাছ কিনতে যাবেন না।😁
পেট কাটা "ষ' প্রথম গল্প (২০২২) রিভিউ ০২
#নো_স্পয়লার
ছোট বেলায় দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানির কাছে থেকে কতই না ভূতের গল্প শুনেছি। আর সে-সব গল্প এখনও মুখস্থ প্রায়। সেই ভূতের গল্পের মধ্যে মাছ নিয়ে কান্ডের গল্পও শুনেছি। ছোট বেলায় শোনা ভূতের গল্প গুলো এবার পর্দায় নিয়ে এসেছে চরকি। পেট কাটা "ষ' অ্যান্থোলজি ওয়েব সিরিজের প্রথম গল্প ছিল ""এই বিল্ডিংয়ে মেয়ে নিষেধ''। কন্টেন্ট টা ভালো হয়েছে নিঃসন্দেহে তবে আরও ভালো হতে পারতো।
চরকির তিন নং অ্যান্থলজি ওয়েব সিরিজ এইটি। প্রথম ঊনলৌকিকের পর জাগো বাহেও ভালো সাড়া ফেলেছিল। আর এইটা নিয়েও বেশ একটা এক্সপেকটেশনের জন্ম নিয়েছিল। এর কারণ নুহাশ হুমায়ূন এবং অসাধারণ ট্রেলারের জন্য। আমাদের দেশে খুব একটা হরর কন্টেন্ট দেখা যায় না, আর যে গুলো দেখা যায় সে গুলো ভালোও হয় না। সত্যি বলতে এই কন্টেন্ট দেখার সময় আমার একটুও ভয় লাগেনি। কারণ গল্পটার সাথে পরিচিত এবং ছোট বেলা থেকেই জেনে এসেছি। তবে অন্যান্য সব মোটামুটি ভালোই ছিল। কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে আরও বেশি ভালো আশা করেছিলাম।
সোহেল মন্ডল বর্তমানে বেশ ভালো অভিনয় করছে। এই কন্টেন্টে তিনি তার স্বাভাবিক অভিনয় টাই করে গেছেন। বলা যায় ভালো অভিনয় করেছেন। ভূত কিংবা পেত্নীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিরিন আক্তার শিলা। এর আগে তাকে কখনো দেখিনি। তার কস্টিউম এবং অভিনয় বেশ ভালো লেগেছে। হরর কন্টেন্ট একটু ডার্ক হয় সে হিসেবে এইটার কালার গ্রেডিং ভালো ছিল। সিনেমাটোগ্রাফি ভালো তবে মেকিং আরও ভালো করা যেতে। বিজিএম ভালো লেগেছে তবে কিছু বিজিএম এ ত্রুটি ছিল। যেমন শুরুর দিকে রাস্তা দিয়ে মাভহ নিয়ে যাওয়ার সময়। সব মিলিয়ে ভালো।
এখন আসি কিছু ব্যাপারে। যেহেতু খাঁটি বাংলা ভূতের গল্প সেহেতু গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে কন্টেন্ট টি নিমার্ণ করলে বেশি জমে যেত। আবার পেত্নীর পায়ের কাদা গুলোও চোখে লেগেছে। শহরে তেমন পুকুর, নদী নেই। গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে অনেক নদী, খাল, পুকুর থাকতো তখন এই ব্যাপার টা ভালো ভাবে আকর্ষণ করতো। স্টরি টেলিং আরও একটু ডিপ করা যেত। যাইহোক বেশ ভালো একটা কন্টেন্ট তাই দ্রুত দেখে ফেলুন।
#হ্যাপি_ওয়াচিং🖤